সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) হচ্ছে Google, Yahoo ও Bing সহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে উচ্চতর পর্যায়ে অবস্থান পাওয়ার জন্য ওয়েবসাইট অপটিমাইজেশন করার একটি প্রক্রিয়া। বর্তমান সময়ে বেশীরভাগ ওয়েব ডেভেলপার ও অনলাইন মার্কেটার গুগল সার্চ রেজাল্টের অসাধারণ কিছু Algorithms এর জন্য গুগল সার্চ ইঞ্জিনকে টার্গেট করে থাকে। তাছাড়া ভিজিটররা ওয়েব সার্চের ৮৫% কাজ Google সার্চ ইঞ্জিন হতে সেরে নেয় বিধায় সবাই Google সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের কৌশল অবলম্বন করে।
আজকের এই টপিকটি এসইও এর একটি বেসিক বিষয়। ব্লগিং শুরুর দিকে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর বেসিক বিষয় নিয়ে লেখা উচিত ছিল কিন্তু আমরা ধারনা করেছিলাম বিষয়টি নিয়ে অন-লাইনে বিভিন্ন ব্লগে অনেকবার লেখা হয়েছে, সেই জন্য বেসিক ব্যাপারগুলো নিয়ে লেখিনি। সম্প্রতি SEO নিয়ে আমাদের ব্লগের বেশ কয়েকজন ভিজিটরের কৌতুহলী প্রশ্ন শুনে এই ধরনের সহজতর বেসিক বিষয়টি নিয়ে লিখতে বাধ্য হলাম।
Search Engine Optimization এই তিনটি শব্দের ভীতরে দুটি অর্থবহুল অংশ রয়েছে। একটি হচ্ছে Search Engine এবং অন্যটি হচ্ছে Optimization. তারমানে দাড়াচ্ছে SEO হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন-কে অপটিমাইজেশন করার এক ধরনের প্রযুক্তিগত ওয়েব কৌশল।
এটিকে আরো সহজভাবে বলা যায় যে, কোন একটি ব্লগ/ওয়েবসাইটকে সার্চ রেজাল্টের ভালো অবস্থানে কিংবা সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পাতায় নিয়ে আসার কৌশল বা প্রক্রিয়াকে এসইও বলা হয়। এটিকে সার্চ ইঞ্জিন হতে ভাল ফলাফল পাওয়ার এক ধরনের নিয়মতান্ত্রিক চালাকিও বলতে পারেন।
Moz এর ভাষ্য অনুসারে এসইও এর সংজ্ঞাএসইও অর্থ সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন, যা ওয়েব সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেজের মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটে ট্র্যাফিকের পরিমাণ এবং গুণগত মান বৃদ্ধি করবে।
সহজ ভাষায় বলা যায় সার্চ ইঞ্জিন হচ্ছে ইন্টারনেটে কীয়ার্ডের মাধ্যমে কোন কিছু খোঁজার এক ধরনের সফটওয়ার বা এপ্লিকেশন। যেখানে কোন কিছু লিখে সার্চ দিলেই চোখের পলকে যে কোন বিষয়ে হাজার হাজার তথ্য আপনার সামনে হাজির করবে। সম্প্রতি সময়ের সবচাইতে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন হচ্ছে Google. এ ছাড়াও জনপ্রিয়তার তালিকায় রয়েছে Bing, Yahoo, Ask, Yandex ও DuckDuckGo সার্চ ইঞ্জিন। সার্চ ইঞ্জিন কি এবং কিভাবে কাজ করে এ নিয়ে আমরা পূর্বে একটি বিস্তারিত পোষ্ট শেয়ার করেছি।
সার্চ ইঞ্জিন World Wide Web এর সকল ধরনের ওয়েবসাইটসহ প্রত্যেকটি সাইটের সকল লিংক ভিজিট অর্থাৎ Crawling করার মাধ্যমে সকল প্রকার ডাটাবেজ Index করে Save করে নেয়। পরবর্তীতে সার্চ ইঞ্জিন Search Query অনুযায়ী ব্লগের Index করা ভালমানের ডাটাগুলো সার্চ রেজাল্টে ক্রমান্বয়ে প্রকাশ করে থাকে। এ ক্ষেত্রে আপনি যত ভালোভাবে আপনার ব্লগটি Search Engine Optimization করবেন, সার্চ রেজাল্টের তত উপরে আপনার ব্লগটির কনটেন্ট দেখতে পাবেন।
যখন কোন মানুষ সার্চ ইঞ্জিনে নির্দিষ্ট কোন বিষয় নিয়ে সার্চ করে, তখন সার্চ ইঞ্জিন এই টপিক অনুযায়ী ঐ বিষয়ের Index হওয়া সবচেয়ে ভালোমানের কন্টেন্ট যুক্ত ব্লগ/ওয়েবসাইট সবার উপরে শো করে। তারপর ব্লগ এবং কন্টেন্টের মান অনুযায়ী ধারাবহিকভাবে সবগুলো ব্লগ শো করতে থাকে। সার্চ ইঞ্জিনের শ্রেষ্ঠ ফলাফল দেখানোর ক্ষেত্রে সার্চ ইঞ্জিন Search Query এর সঙ্গে Latest Ranking Algorithm ব্যবহার করে।
এটি হচ্ছে Search Query’s এর জন্য ধারাবহিকভাবে ভালো ফলাফল পাওয়ার সূচিবদ্ধ একটি গাণিতিক ক্যালকুলেশন। আরও সহজভাবে বললে দাড়ায় যে, বিভিন্ন ব্লগের Ranking এবং মান অনুযায়ী Index হওয়া কনটেন্টগুলো সার্চ রেজাল্টে প্রকাশ করার জন্য একটি ধারাবাহিক তালিকা। অর্থাৎ যার নম্বর যত উপরে তার কনটেন্ট সার্চ রেজাল্টের সবার উপরে থাকবে।
যখন কোন ব্যক্তি সার্চ ইঞ্জিনে কোন কিছু সার্চ করে তখন সার্চ ইঞ্জিন সার্চ রেজাল্টে অসংখ্য কনটেন্ট শো করে। সার্চ রেজাল্ট মূলত ব্লগের সার্চ Ranking অনুযায়ী Depend-Up করে। অর্থাৎ যার ব্লগের Ranking যত ভালো তার ব্লগের কন্টেন্ট সার্চ রেজাল্টের সাবার উপরে দেখাবে, আর Ranking ভালো না হলে আপনার কন্টেন্ট সার্চ রেজাল্টের প্রথম পাতায় দেখাবে না। তাছাড়াও একটি ব্লগকে সার্চ রেজাল্ট পেজে শো করার ক্ষেত্রে সার্চ ইঞ্জিন আরো বিভিন্ন ধরনের র্যাংকিং এলগরিদম প্রয়োগ করে।
একটি ব্লগ/ওয়েবসাইটকে সার্চ রেজাল্টের ভালো অবস্থানে বা প্রথম পাতায় নিয়ে আসার জন্য এবং সার্চ ইঞ্জিন হতে ভাল র্যাংকিং পাওয়ার জন্য বা সার্চ ইঞ্জিন হতে ব্লগে প্রচুর পরিমানে ভিজিটর পাওয়ার জন্য মূলত সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) করা হয়। একজন লোক যখন তার ওয়েবসাইটকে সঠিকভাবে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজ করবে তখন সার্চ ইঞ্জিন হতে তার ব্লগে প্রচুর পরিমানে ভিজিটর বাড়তে থাকবে। কারণ সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) করার ফলে সার্চ ইঞ্জিন তার ব্লগের কন্টেন্টের বিষয়বস্তু সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারনা পাবে। কাজেই যে কোন ওয়েবসাইট-কে সফল করতে হলে বা ওয়েবসাইট হতে আয় করার জন্য প্রতিনিয়তই সঠিকভাবে তার ওয়েবসাইটে এসইও করতে হবে।
সাধারণ সেন্সে চিন্তা করে দেখুন, আপনি যখন কোন একটি বিষয়ের উপর পোস্ট লিখবেন তখন সেই বিষয়ে অনলাইনে কি পরিমানে সার্চ করার হয়, কি কি Keyword লিখে সার্চ করা হয়, সেই বিষয়ে অনলাইনে কি পরিমান পোস্ট রয়েছে, কোন কোন ব্লগের পোস্ট আপনার নতুন পোস্টটির কম্পিটিটর হবে, আপনার কাঙ্খিত কীওয়ার্ড এর ভ্যালু কি পরিমান আছে, সেই কীওয়ার্ড নিয়ে কাজ করে পোস্ট র্যাংক করাতে পারলে কি পরিমানে ভিজিটর পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে ও কি পরিমান আয় করা সম্ভব হবে এবং সেই পোস্টটি র্যাংক করানোর জন্য কি পরিমান ব্যাকলিংক প্রয়োজন হবে ইত্যাদি বিষয়ে জানার জন্য SEO করা হয়ে থাকে।
এই সবগুলো বিষয়কে সামারাইজ করে সংক্ষেপে বলা যায় যে, অনলাইন মর্কেটিং এ সফলতা পাওয়ার জন্য সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করতে হবে এবং সফলতা পাওয়ার জন্য সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের বিকল্প কিছু নেই।
কাউকে যদি জিজ্ঞেস করেন এসইও কত প্রকার, তাহলে যে কেউ অনপেজ এসইও এবং অফপেজ এসইও এর কথা বলবে। এসইও দুই প্রকারের কথাটি ঠিক আছে। তবে অনপেজ এসইও এবং অফপেজ এসইও নয়। এসইও হচ্ছে মূলত দুই প্রকারের। যথা-
অর্গানিক এসইও আবার দুই ধরনের।
অর্গানিক এসইও বলতে বুঝায় সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের সকল নিয়ম যথাযথভাবে অনুসরণ করে সার্চ রেজাল্টের পাতায় অবস্থান নেয়ার যাবতীয় প্রক্রিয়া। অন্যদিকে পেইড এসইও হচ্ছে গুগল কোম্পানির নিকট টাকার বিনিময়ে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পাতায় চলে আসা।
আপনারা ভালভাবে লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন যে, কোন একটি বিষয় সার্চ দেয়ার পর সার্চ রেজাল্টের সবার উপরের কিছু ওয়েবসাইট থাকে যেগুলোতে ছোট করে Ad লিখা থাকে। সেগুলোই পেইড এসইও এর মাধ্যমে সবার উপরে এসেছে। অন্যদিকে এগুলোর নিচে সে সমস্ত ওয়েবসাইট থাকে সেগুলো অর্গানিক এসইও অর্থাৎ কোন টাকা না দিয়ে গুগলের পাতায় অবস্থান নিয়েছে।
অনপেজ এসইও হচ্ছে একটি ওয়েবসাইট/ব্লগকে পরিপূর্ণভাবে সাজানোর যাবতীয় কার্যক্রম অর্থাৎ একটি ওয়েবসাইটকে ভালভাবে তৈরি করার জন্য যা কিছুর প্রয়োজন হয় তার সবটুকুই হচ্ছে On Page SEO. অনপেজ এসইও হচ্ছে ব্লগের জন্য উপযুক্ত Keyword, Setting-up Meta, Naming Pages, Page Search Descriptions ইত্যাদি ভালোভাবে Settings করার একটি প্রক্রিয়া। আর অফপেজ এসইও হচ্ছে আপনার ব্লগটির কনটেন্টের লিংক বিভিন্ন জনপ্রিয় সাইটে শেয়ার করা, ব্যাক লিংক তৈরী করা, বিভিন্ন ফোরামে জয়েন, ব্লগের প্রচারনাসহ ইত্যাদি উপায়ে জনপ্রিয় করে তোলা।
White Hat এসইও হচ্ছে বিভিন্ন প্রযুক্তিগত ওয়েব কৌশল কাজে লাগিয়ে আপনার ব্লগটির Rank বৃদ্ধি করে সার্চ রেজাল্টের সবার উপরে নিয়ে আসা। অন্যদিকে Black Hat এসইও হচ্ছে কিছু অবৈধ উপায় অবলম্বন করে সার্চ ইঞ্জিনের নিয়ম ভঙ্গ করে ব্লগের Rank বৃদ্ধি করে নেয়া। বর্তমানে গুগল সার্চ র্যাংকিং নির্ধারনের ক্ষেত্রে গুগল আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স (AI) টেকনোলজি ব্যবহার করছে বিধায় Black Hat এসইও কৌশলে ব্লগ র্যাংক করানো প্রায় অসম্ভব বললেই চলে। সেই জন্য সব বড় বড় এসইও এক্সপার্টরা White Hat এসইও এর প্রতি মনোযোগি হচ্ছে।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবে না। এক কথায় বলতে গেলে এভাবে বলা যায় অন-লাইন ব্লগিং, মার্কেটিং, ব্যবসার প্রচার ও অনলাইনে কোন বিষয়ে সফলতা অর্জনের জন্য প্রোপার এসইও করতেই হবে। এসইও না করে কোনভাবেই অনলাইনের কোন বিষয়ে সাফল্য অর্জন করতে পারবেন না।
তার কারণ হচ্ছে- ইন্টারনেটে সবাই সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সকল বিষয় খোঁজে থাকেন। বিশেষকরে গুগল সার্চ ইঞ্জিনের ব্যবহার এত ব্যাপক, যার জন্য গুগল সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন না করে কোনভাবে সফল হওয়ার উপায় নেই। অধীকন্তু সম্প্রতি সময়ের জনপ্রিয় ওয়েব ব্রাউজার Mozilla Firefox ও Google Chrome সহ আরেক অনেক জনপ্রিয় Browsers গুলির ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন Google হওয়ার করনে গুগল সার্চ ইঞ্জিনের ব্যবহার আরও বেশী বেড়ে গেছে। কাজেই আপনার ব্লগ/ওয়েবসাইটটি সবার কাছে পরিচিত ও জনপ্রিয় করে তোলার জন্য সার্চ ইঞ্জিনের বিকল্প আর কিছু নেই।
কিভাবে এসইও করবেন কথাটি শুনে হয়ত ভাবছেন এখনি সবকিছু জেনে যাবেন। আসলে কিভাবে এসইও করতে হয় সেটির সহজ বা সংক্ষিপ্ত কোন উপায় নেই। এসইও হচ্ছে চলমান গতানুগতিক পরিবর্তনশীল বিশাল একটি প্রক্রিয়া। যার বেশীরভাগ বিষয়ই সবসময় আপডেট ও পরিবর্তন হতে থাকে। তবে আপনি যদি এসইও সম্পর্কিত বেসিক বিষয়গুলো ভালভাবে জানেন ও বুঝেন, তাহলে সময়ের সাথে সাথে যতই পরিবর্তন হউক না কেন পরিবর্তনের সবকিছুই আপনি সহজে বুঝতে পারবেন। সেই জন্য আপনাকে SEO এর মূল বিষয়গুলি অবশ্যই কোন ভাল একজন অভীজ্ঞ লোক বা প্রতিষ্ঠানের নিকট হতে শিখে নিতে হবে। সকলের প্রথমিক ধারনা নেওয়ার জন্য এসইও বেসিক কিছু ধাপ শেয়ার করে দিচ্ছি।
ভালোভাবে এসইও শিখার জন্য দুই ধরনের উপায় রয়েছে। একটি হচ্ছে কোন অভীজ্ঞ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট হতে শিখে নেয়া এবং অন্যটি হচ্ছে অন-লাইন হতে ভালোমানের বিভিন্ন ব্লগ/ওয়েবসাইট হতে শেখা। অন-লাইন হতে শেখার ক্ষেত্রে আপনাকে প্রচুর পরিমানে ধৈর্য্য ধারন করতে হবে। অন্যদিকে কোন ভালো প্রতিষ্ঠান থেকে শেখার ক্ষেত্রে অল্প সময়ে শিখে নিতে পারবেন।
তবে একটা কথা মনে রাখবেন আপনি অন-লাইন বা যে কোন প্রতিষ্ঠান হতে শিখুন না কেন অবশ্যই সেটি ভালমানের প্রতিষ্ঠান বা ভালমানের অল-লাইন ব্লগ হতে হবে। সম্প্রতি সময়ে এসইও শেখানোর অনেক প্রতিষ্ঠানই হাতের কাছে রয়েছে, কিন্তু এদের মধ্যে ভালমানের প্রতিষ্ঠান পাওয়া খুব দুরূহ একটা ব্যাপার।
উদাহরণ স্বরূপ- আজ আমি একটি এসইও সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানের YouTube চ্যানেলে ব্লগের Heading ট্যাগের সেটিংস সম্পর্কিত একটি টিউটরিয়াল দেখি। সেখানে একজন শিক্ষক তার ছাত্রদের H1, H2 ও H3 ট্যাগ সেটিংসটা ভূলভাবে শেখাচ্ছিলেন। বিষয়টি দেখে অবাক না হয়ে পারলাম না।
আরেকটি উদাহরণ- আমার ব্লগের একজন ভিজিটরের নিকট হতে “আইটি বাড়ী ডট কম” ব্লগটার প্রশংসা শুনে ব্লগটিতে ভিজিট করি। ভিজিট করার পর সেখানে অবশ্যই এসইও সংক্রান্ত বেশ কিছু ভালোমানের ভিডিও টিউটরিয়াল দেখতে পাই। অবশ্য টিউটরিয়ালগুলো যে কোন ব্যক্তিকে এসইও এর বেসিক বিষয়গুলি শিখতে সাহায্য করবে। তবে এই ভিডিওগুলোর মধ্যে থাকা অনেক বিষয়ই আপডেট হয়েগেছে। সে ক্ষেত্রে ভিডিওগুলো থেকে সবকিছু সঠিকভাবে শেখা সম্ভব নয়।
অন্যদিকে “আইটি বাড়ী ডট কম” ব্লগটির Source ফাইল হতে ব্লগটির Meta Key Word ট্যাগের ভূল ব্যবহার দেখে আবাক না হয়ে পারলাম না। তখন বাধ্য হয়ে ভূলটি সংশোধনের জন্য রেফারেন্সসহ একটি কমেন্ট করি, কিন্তু “আইটি বাড়ী ডট কম” এর এ্যাডমিন আব্দুল কাদের সাহেব আমার কমেন্টটি অনুমোদন করেননি। পরের দিন দেখতে পাই উনার ব্লগের সোর্স ফাইল দেখার উপায় বন্ধ করে দিয়েছেন। আমার কমেন্টটি অনুমোদন না করা এবং সোর্স ফাইল বন্ধ করে দেয়ার সঠিক কারণ আমার কাছে বোধগম্য হয়নি।
এই উদাহরণ গুলোর পিছনে আমার একটাই উদ্দেশ্য আপনি যে প্রতিষ্ঠান বা অনলাইন হতে এসইও শিখুন না কেন সেটি যেন হয় ভালোমানের প্রতিষ্ঠান বা ব্লগ। তাহলে আপনি সঠিকভাবে পরিপূর্ণ এসইও শিখতে সক্ষম হবেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশে এসইও শেখানো নিয়ে অনলাইনে ও অফলাইনে বেশ কম্পিটিশন শুরু হয়েছে। অনেকে আবার নিজেকে এসইও এক্সপার্ট হিসেবে দাবি করছে। বিশেষ করে কিছু নতুন ইউটিউবাররা এসইও নিয়ে বেশ লাফালাফি করছে। অধিকাংশ লোক এসইও বিষয়ে সামান্য নলেজ নিয়ে এসইও শেখানোর কোর্স চালু করছে।
কিছু কিছু ইউটিউবার আছে যারা ইউটিউব ভিডিওতে বলে থাকে, আমার অমুক ব্লগে ১০ টা পোস্ট দিয়ে প্রতিদিন ১০০০ ভিজিটর পাচ্ছি। কারণ আমি আমার ব্লগে শতভাগ এসইও করেছি। এই ধরনের ভূল ব্যাখ্যা দিয়ে কিছু নতুন ব্লগার ও ইউটিউবার এসইও বিষয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।
গতকাল ফেসবুকে একজন এসইও এক্সপার্ট এর ভিডিও দেখলাম। যেখানে তিনি এসইও নিয়ে যুক্তি দেখাচ্ছেন এবং অনেক মজার মজার কথা বলছেন। তিনি বললেন যে, বাংলাদেশে নাকি অনেক এসইও এক্সপার্ট আছে যারা এসইও বিষয়ে কিছুই জানে না। তিনি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বললেন, তিনি একটি কিওয়ার্ড দিবেন, কেউ যদি সেই কিওয়ার্ড র্যাংক করাতে পারে, তাহলে তিনি তাকে ১০ হাজার টাকা দেবেন। আর কেউ না করাতে পারলে তিনি সেটা করিয়ে দেখাতে পারবেন।
এ ধরনের ফালতু মার্কা যুক্তি দেখলে হাসি থামানো যায় না। আরে ভাই, একটি ওয়েবসাইটের কোন একটি কিওয়ার্ড র্যাংক করানো এত সহজ নয়। কেউ ১০০% চ্যালেঞ্জ দিয়ে কোন কিওয়ার্ডের র্যাংক করাতে পারবে না। এ ব্যাপারে বিখ্যাত এসইও এক্সপার্ট Neil Patel এবং Brian Dean নিজেই বলেছেন, একটি কিওয়ার্ড র্যাংক করানোর নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারবে না।
উপরের চিত্রটি ভালোভাবে লক্ষ্য করুন। আমি গুগল সার্চ ইঞ্জিনে What is SEO লিখে সার্চ করার ফলে এ বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে উপরের ওয়েবসাইটগুলো শো হয়। আপনি চাইলে নিজেই এ বিষয় গুগলে সার্চ করে যাচাই করে নিতে পারেন।
এখানে What is SEO বিষয়ে Moz এর পোস্ট এক নম্বর র্যাংক করছে। তারপর Search Engine Land এর পোস্ট ২য় অবস্থানে রয়েছে এবং Neil Patel এর ব্লগ ৩য় অবস্থানে রয়েছে। আপনি Moz এর পোস্টটি ভিজিট করলে দেখতে পাবেন, এসইও বিষয়ে তাদের পোস্টে খুব কম আর্টিকেল রয়েছে। অথচ তাদের পোস্ট এ বিষয়ে সবচাইতে ভালো র্যাংক করছে।
পক্ষান্তরে Neil Patel এর ব্লগের এই পোস্ট ভিজিট করলে দেখতে পাবেন যে, পোস্টের মধ্যে আর্টিকেল এর কোনো অভাব নেই। এখানে আমাদের দেশের চাটুকার এসইও এক্সটার্টদের কাছে আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে, তাহলে Neil Patel এর আর্টিকেল ১ নম্বর র্যাংক করছে না কেন?
আপনাদের কষ্ট করা লাগবে না, প্রশ্নের উত্তর আমি নিজেই দিচ্ছি। শুধুমাত্র পোস্টে ভালো আর্টিকেল থাকলেই যেকোন বিষয়ে পোস্ট র্যাংক করানো যায় না। যেকোন কিওয়ার্ড র্যাংক করানোর জন্য ভালো আর্টিকেল এর পাশাপাশি আরো অনেক বিষয় জড়িত থাকে। বিশেষ করে ব্লগের PA, DA এবং ব্লগে বয়স সহ আরো বিভিন্ন বিষয়ের উপরে কিওয়ার্ড র্যাংক করানোটা নির্ভর করে। তাছাড়া যে কিওয়ার্ড র্যাংক করাবেন, সেই কিওয়ার্ড এর কিওয়ার্ড ডিফিকাল্টি কতটুকো সেটার উপর ডিপেন্ড করে, কিওয়ার্ড র্যাংক করানো সম্ভব হবে কি না?
আপনি আজ নতুন একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট অপেন করে, কোন কিওয়ার্ড র্যাংক করানোর হাজার চেষ্টা করলেও সেটা র্যাংক করাতে পারবেন না। কাজেই এসইও বিষয়ে এ ধরনের আবাল মার্কা কথা বলে অযথা সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করবেন না।
বেশীরভাগ লোকই এসইও বিষয়টাকে বেশ কঠিন ভেবে মনেকরে আমার দ্বারা এসইও শেখা সম্ভব হবে না। আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলব বিষয়টাকে এত কঠিন না ভেবে সহজভাবে নিলে আপনিও একজন এসইও এক্সপার্ট হতে পারবেন। বিশেষকরে পেইড এসইও এর কথা না ভেবে আপনি ঐ টাকা দিয়ে ভালোভাবে এসইও শিখে নিলে আপনার ব্লগটাকে ভবিষ্যতে একটি ভালোমানের প্লাটফর্মে নিয়ে যেতে সক্ষম হবেন।
এই পোস্টের মাঝামাঝি অংশে আমি বলেছিলাম যে, পোস্টের শেষাংশে আমি আপনাদের বলব আজকের এই পোস্টে আমি কি কি এসইও এর কাজ করেছি। আমার মনেহয় এই বিষয়টি শেয়ার করলে সবাই এসইও এর বেসিক বিষয় সম্পর্কে আরেকটু পরিষ্কার ধারনা নিতে পারবেন?
প্রথমে আমার এই পোস্টটির পরিপূর্ণ Keyword রিসার্চ করে নিয়েছি। কারণ কীওয়ার্ড রিসার্চ ব্যতীত কোনভাবে একটি পোস্ট র্যাংক করানো সম্ভব নয়। সে জন্য আমি প্রথমেই Google Keyword Planner সহ আরো অন্যান্য কীওয়ার্ড রিসার্চ টুলের মাধ্যমে কীওয়ার্ড রিসার্চ করে নিয়েছি এবং রিসার্চ করে আজকের পোস্টের নিম্নোক্ত গুরুত্বপূর্ণ Keywords গুলো খোঁজে বের করেছি।
আপনি আমার আজকের পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়লে দেখতে পাবেন যে, আমার পোস্টের বিভিন্ন জায়গাতে উপরের প্রায় সবগুলো কীওয়ার্ড রয়েছে। যার ফলে উপরের যেকোন একটি কীওয়ার্ড লিখে অনলাইনে সার্চ করলে আমার পোস্টটি পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে।
তাছাড়ও কীওয়ার্ডটিতে র্যাংক করতে হলে আমাকে কি কি করতে হবে, কি পরিমানে কম্পিটিশনে পড়তে হবে, কোন কোন ব্লগ গুগলে আমার পোস্টটির কম্পিটিটর হতে পারে, কীওয়ার্ড ডিফিকাল্টি কেমন, কীওয়ার্ডটি হতে কি পরিমান ট্রাফিক পাওয়া যেতে পারে, আমার পোস্টের কম্পিটিটরদের পোস্টে কি পরিমানে ব্যাকলিংকস রয়েছে, কি পরিমানে সোশ্যালমিডিয়া শেয়ার হয়েছে, তাদের পোস্টের চাইতে আমার পোস্ট র্যাংক করানোর জন্য কি কি করতে হবে এবং কি পরিমান সময় লাগতে পারে ইত্যাদি বিষয়ে বিভিন্ন টুলস এর মাধ্যমে রিসার্চ করেছি।
কীওয়ার্ড রিসার্চ করার পর পর কাঙ্খিত বিষয়ে আমার ব্লগের কম্পিটিটরদের চাইতে বেশী তথ্যবহুল ও দীর্ঘ একটি পোস্ট লেখার চেষ্টা করেছি। তাছাড়া নিম্নোক্ত আনুষাঙ্গিক বিষয়গুলো অনুসরণ করেছি।
সর্বশেষঃ সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) কি, কিভাবে SEO শিখবেন এবং কিভাবে একটি ব্লগের পরিপূর্ণ এসইও করবেন সে বিষয়ে আলোচনা করে কখনো শেষ করা যাবে না। কারণ গুগল সহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনের অসংখ্য র্যাংকিং ফ্যাক্টর রয়েছে। সবগুলো র্যাংকিং ফ্যাক্ট অনুসারে এসইও করা অনেক কঠিন একটা কাজ। সে জন্য যে যত বেশী এসইও করতে পারে সে তত সহজে সার্চ ইঞ্জিন হতে ট্রাফিক সংগ্রহ করে ব্লগকে সফলতার প্রান্তে নিয়ে যেতে পারে।